
শেয়ার করুন
জামালগঞ্জ উপজেলার ভীমখালী ইউনিয়নের মানিগাওঁ গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল ওয়াদুদ। তিন একর জমিতে প্রায় ৬ টির বেশি অংশে “জুনায়েদ মৎস খামার” নামে একটি খামার স্থাপন করেন কয়েক বছর হল। তিনি দেশি বিদেশী বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করতেন।
আব্দুল ওয়াদুদ একজন বিদেশ ফেরত মৎসজীবি। দীর্ঘ পনের বছর প্রবাসে থেকে নিজের পরিশ্রমে জমানো অর্থ দিয়ে তিন একর জমিতে মৎস চাষ শুরু করেন জামালগঞ্জ উপজেলার এই মৎসজীবি। বিনিয়োগ করেন প্রায় নিজের সঞ্চয়ের প্রায় ১০ লক্ষ টাকা। স্বপ্ন দেখতেন মৎস চাষ করে নিজের বাকিঁ জীবনটা ও ছেলে দের পড়ালেখা সহ যাবতীয় সংসার খরচ চালাবেন এই খামার থেকে। কিন্তু এবারের বন্যায় সব স্বপ্ন ভেসে গেছে বানের পানিতে। স্বপ্ন দেখছিলেন ৪-৫ লক্ষ মুনাফা লাভ করবেন। বানের পানিতে তার সব মাছ ভেসে যাওয়ায় তিনি এখন নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। সবকিছু হারিয়ে তিনি এখন দিশেহারা আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়,খামারটির চতুর দিকে পার পানির নিচে। প্রথম বার বন্যা দেখা দেওয়ায় নিজের আত্ন রক্ষার স্বার্থে নেট দিয়ে সাময়িক ভাবে গিড়ে রাখলেও ২য় বার বন্যায় আর তা রক্ষা করা সম্ভব হলনা। তৃতীয় বার আবারও পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আর কোন আশায় বেচেঁ তাকল না। নিজের বসত ভিটা পর্যন্ত পানিতে ভাসল। ১০-১৫ লক্ষ টাকার বিভিন্ন জাতের মাছ পানিতে ভাসল। তিনি জানান আগামী আগষ্ট সেপ্টেম্বর মাসে মাছ গুলো বিক্রি শুরু করতাম। প্রতিটি মাছ ১০০০/৭০০ শত গ্রাম ওজন হয়েছে। তাতে প্রায় ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকা লাভ হত তার। জামালগঞ্জ -সুনামগঞ্জ সংযোগ সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ায় সহজেই পানি কমছেনা এবারের বন্যায় ফলে চরম হতাশায় আছেন আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া।
মৎস চাষী আব্দুল ওদুদ বলেন, দীর্ঘদিন সৌদিআরব থেকে দেশে এসে কিছু করার স্বপ্ন নিয়েই খামার করেছিলাম। আমার খামারে ২ জন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করত।তিন একর জমি ২০ লক্ষ টাকায় ক্রয় করে খামারে ১৫ লক্ষ টাকার উপরে বিনিয়োগ করেছিলাম। আশা ছিল আগস্ট মাসে মাছ বিক্রি হলে ৪/৫ লক্ষ টাকা আয় হবে। কিন্তু বন্যায় আমার সব স্বপ্ন ভেঙ্গে গেছে। এ ক্ষতি কিভাবে পুষিয়ে নেব তা ভেবে পাচ্ছি না। আবারও যে ব্যবসা শুরু করতে পারবো,সেই রকম কোন ব্যবস্থা আমার নেই। ঐসব করতে গিয়ে কিছু দেন দেনাও করতে হয়েছে। এখন কিভাবে দেন দেনা শুধ করব আর কিভাবে নিজের ছেলে মেয়ে বাচঁব সেই চিন্তায় আছি। তাই সরকারের কাছে আমাদের দাবি আমিসহ যারা সহায়-সম্বল হারিয়েছি তাদের দিকে একটু নজর দেওয়ার জন্য। যদি আমরা সরকার কতৃক বিভিন্ন সহযোগিতা সহ লোন পাওয়ার সুযোগ পেতাম তাহলে আবারও ঘুড়ে দাড়াতে পারতাম।
এ ব্যাপারে স্থানীয় লোকজন জানান, আমাদের আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া সৌদি তাকতেন তার বাড়ীছিল সাচনাবাজার ইউনিয়নের শুকদেবপুর গ্রামে বিবাহ সুত্রে এখানে আসা।দেশে ফিরে এখানে এসেই নিজের যা উপার্যন ছিল তা দিয়ে এই মৎস খামার করেন।কিন্তু এবার আর উনার শেষ রক্ষা হলো না। আমার জানামতে এবারও তিনি ভাল টাকা বিনিয়োগ করে মাছের খামার গড়ে তুলেছিলেন। কিন্তু চলমান বন্যায় তার সবকিছু কেড়ে নিয়েছে।